Skip to content

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০২৩ সালের ১১ এপ্রিল ৮১ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। সাভার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ক্যাম্পাসে তাঁকে সমাহিত করা হয়।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের রাউজানের কয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম হুমায়ুন মোর্শেদ চৌধুরী এবং মা হাসিনা বেগম চৌধুরী। বাবা ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা, মা গৃহিণী।

জাফরুল্লাহ পুরান ঢাকার নবকুমার ইনস্টিটিউশন থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৬৬ সালে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। এফআরসিএস পড়ার জন্য তিনি লন্ডনে যান। চতুর্থ বর্ষে পড়ার সময় মুক্তিযুদ্ধের সূচনা। পরীক্ষায় বসার পরিবর্তে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন।

কলেজ জীবন থেকে জাফরুল্লাহ প্রগতিশীল রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মুজিবনগর সরকারের জন্য তহবিল সংগ্রহ এবং লন্ডনের জনগণ ও ব্রিটিশ আইন প্রণেতাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সমর্থন লাভে স্বেচ্ছাসেবকের ভূমিকা পালন করেন।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন জাফরুল্লাহ। প্রথম দিকে কলকাতা ও ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের জন্য ওষুধসামগ্রী সংগ্রহ ও প্রেরণ ছিল এর প্রধান কাজ। লন্ডনের সড়কে এক র‌্যালিতে অংশ নিয়ে প্রকাশ্যে পাকিস্তানের পাসপোর্ট ছিঁড়ে ফেলে দেন। ডা. এমএ মবিনকে সঙ্গে নিয়ে তিনি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় যান। এদিকে ত্রিপুরার মেলাঘরে ছিল মুক্তিযুদ্ধের ২ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর খালেদ মোশাররফের সদরদপ্তর। যুদ্ধাহত ও অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা ও সেবাদানের লক্ষ্যে খালেদ মোশাররফের উদ্যোগে বাঁশ ও খড় দিয়ে নির্মাণ করা হয় বাংলাদেশের ফিল্ড হাসপাতাল। লন্ডন থেকে ওষুধ ও অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে এসে জাফরুল্লাহ ও মবিন এ হাসপাতালে যোগ দেন। আরও কয়েকজন ডাক্তার, কিছুসংখ্যক নার্সসহ মুক্তিযুদ্ধের সময় তারা সেখান থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা দেন। তিন সপ্তাহ প্রশিক্ষণ দিয়ে শতাধিক নারীকে নার্স হিসেবে গড়ে তোলেন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর অসহায় গণমানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবার ব্রত নিয়ে ঢাকার অদূরে সাভারে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রতিষ্ঠা করেন এক ব্যতিক্রমধর্মী হাসপাতাল, নাম ‘গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র’। কিডনি রোগীদের স্বল্পমূল্যে ডায়ালাইসিস দিতে এ কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠিত হয় ১০০ শয্যাবিশিষ্ট ইউনিট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *