Skip to content

ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর নীতিমালা গ্রহণ

ট্রাম্প প্রশাসনকে শত শত, এমনকি হাজারো অভিবাসীকে দ্রুত তাঁদের নিজ দেশ ছাড়া অন্য দেশে বিতাড়িত করার নির্দেশ দেওয়া থেকে বিরত থাকার আদেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একজন বিচারক।

নিজ দেশে বিতাড়িত হওয়ার পর নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হওয়া বা প্রাণ হারানোর ঝুঁকির বিষয়ে অভিবাসীদের কোনো কথা বলার সুযোগ দিচ্ছে না ট্রাম্প প্রশাসন। এ অবস্থায় গতকাল শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ডিস্ট্রিক্ট বিচারক ব্রায়ান মারফি ট্রাম্প প্রশাসনের ওই পরিকল্পনার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী পরিকল্পনায় এটি একটি নতুন আঘাত। ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর সব নীতিমালা গ্রহণ করছেন।

এর আগে গত মাসে বোস্টনভিত্তিক একজন বিচারক ট্রাম্প প্রশাসনের বিতাড়ন প্রক্রিয়া দ্রুত করার পরিকল্পনার ওপর অস্থায়ীভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন, যেন প্রশাসনের অভিবাসীদের অপসারণের ক্ষমতা বাধাগ্রস্ত হয়।

যেসব অভিবাসীর কিছু ক্ষেত্রে আইনি সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার আছে, তাঁদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো থেকে প্রশাসনকে বিরত রাখতে ওই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।

গতকালের নিষেধাজ্ঞা ওই আদেশকে বহাল রাখতে জারি করা হয়েছে। আইনিভাবে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসী বিতাড়নের পরিকল্পনার ওপর এ নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।

যুক্তরাষ্ট্রে যখন সরকারের কোনো নীতিমালা আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে, তখন ফেডারেল বিচারকেরা যে আদেশ দেন, তা প্রায়ই দেশজুড়ে কার্যকর হয়।

আদালতের এসব সিদ্ধান্ত দেশজুড়ে কার্যকর করা বাধাগ্রস্ত করতে ট্রাম্প প্রশাসন এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন করেছিল। ট্রাম্প প্রশাসনের আবেদন ছিল, যাঁদের আবেদনের ভিত্তিতে আদালত এমন সিদ্ধান্ত দেন, শুধু তাঁদের ওপরই তা কার্যকর করা হোক।

বিচারক ব্রায়ান মারফি বলেছেন, ‘আদালত মনে করছেন, এসব বিতাড়ন ভুলভাবে হয়েছে অথবা ভুলভাবে করা হবে। উল্লেখ করার মতো যেসব ক্ষতির সম্মুখীন বাদীরা হতে পারেন, সে বিষয়ে তাঁদের কিছু বলার কোনো সুযোগ দেওয়া হয় না।’

এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

হিউম্যান রাইটস ফার্স্টের অ্যানওয়েন হিউস বলেছেন, যাঁদের তৃতীয় কোনো দেশে বিতাড়ন করা হয়েছে, তাঁদের অনেকে শরণার্থী এবং তাঁদের নিজ দেশে ফেরত না পাঠানোর সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। নিজ দেশে গেলে তাঁরা নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হতে পারেন।

ট্রাম্প প্রশাসনের দ্রুত বিতাড়নের বিরুদ্ধে যাঁরা আদালতে গেছেন, হিউস তাঁদের পক্ষের একজন আইনজীবী।

২০২৩ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে ১ হাজার ৭৬৯ জন আদালতের চূড়ান্ত আদেশে তাঁদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর বিরুদ্ধে সীমিত সুরক্ষা পাওয়ার নিশ্চয়তা পান। নিজ দেশে ফেরত পাঠালে তাঁদের জীবন ও স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়তে পারে অথবা সেখানে নিপীড়নের শিকার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

আদেশ লঙ্ঘন করে ভেনেজুয়েলার অভিবাসীদের বিতাড়ন নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনকে বিচারপতির হুঁশিয়ারি

এ বছর ফেব্রুয়ারিতে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তর অভিবাসন কর্মকর্তাদের এ ধরনের সুরক্ষা পাওয়া ব্যক্তিদের মামলা পর্যালোচনার করার নির্দেশ দিয়েছে ও তাঁদের পুনরায় আটক করে তৃতীয় কোনো দেশে পাঠানো যায় কি না, তা দেখতে বলেছে।

পরে অভিবাসীদের অধিকারের পক্ষে কাজ করা কয়েকটি সংগঠন একদল অভিবাসীর পক্ষে আদালতে গিয়ে নতুন জায়গায় তাঁদের দ্রুত বিতাড়ন আটকে দেওয়ার আবেদন করেন।

বিচারক মারফি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, আদালতের নির্দেশ ছাড়া ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসীদের বিতাড়ন করলে সেটি হয়তো নিপীড়নবিরোধী নীতিমালার লঙ্ঘন হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *